বৃহস্পতিবার অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ নিয়ে বাংলাদেশ করোনাভাইরাসের মোট চারটি টিকা অনুমোদন পেল।
এর আগে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড, রাশিয়ার তৈরি স্পুৎনিক-ভি এবং চীনের সিনোফার্মের তৈরি টিকার অনুমোদন দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
এর মধ্যে সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে কেনা কোভিশিল্ড দিয়েই গত ফেব্রুয়ারির শুরুতে দেশে গণটিকাদান শুরু করেছিল সরকার। চীনের সিনোফার্মের কাছ থেকে টিকা কেনার প্রস্তাবও মঙ্গলবার সরকারের অনুমোদন পেয়েছে। উপহার হিসেবে চীনের কাছ থেকে পাওয়া এ টিকা দেশে প্রয়োগও শুরু হয়েছে।
রাশিয়ার কাছ থেকে স্পুৎনিক-ভি কেনার জন্য সরকারি পর্যায়ে আলোচনা চলছে। আর ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি এক লাখ ৬২০ ডোজ টিকা বাংলাদেশ পাচ্ছে টিকার আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স থেকে।
ফাইজারের টিকার ওই চালান আগামী ২ জুন দেশে এসে পৌঁছাবে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ইতোমধ্যে জানিয়েছেন।
গত বছরের ২ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্য ফাইজারের টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমতি দেয়। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে এখন এ টিকা প্রয়োগ করা হচ্ছে।
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও তাদের জরুরি ব্যবহার্য টিকার তালিকায় ফাইজারের ভ্যাকসিনকে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড বা সিনোফার্মের তৈরি টিকার মতই ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকাও নিতে হবে দুই ডোজ করে। প্রথম ডোজ দেওয়ার ৩ থেকে ৪ সপ্তাহ পর দিতে হবে দ্বিতীয় ডোজ।
১২ বছর বা তার বেশি বয়সীদের ওপর ফাইজারের টিকা প্রয়োগ করা যাবে। চূড়ান্ত ধাপের ট্রায়ালে এ টিকা ৯৫ শতাংশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে বলে উৎপাদকদের ভাষ্য।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমানের স্বাক্ষরে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফাইজারের টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদনের জন্য গত ২৪ মে আবেদন করেছিল স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর টিকার ডোশিয়ের মূল্যায়ন শেষে ২৫ মে কোভিড-১৯ চিকিৎসার জন্য পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সির ক্ষেত্রে ঔষধ, ইনভেস্টিগেশনাল ড্রাগ, ভ্যাকসিন এবং মেডিকেল ডিভাইস মূল্যায়নের জন্য গঠিত কমিটির কাছে উপস্থাপন করে।
ওই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতেই বৃহস্পতিবার ফাইজারের কোভিড-১৯ এমআরএনএ ভ্যাকসিন জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
পরীক্ষামূলক প্রয়োগে তুলনামূলকভাবে বেশি কার্যকারিতা দেখালেও ফাইজারের টিকা সংরক্ষণ ও সরবরাহের কাজটি কোভিশিল্ডের মত সহজ নয়।
কোভিশিল্ড যেখানে সাধারণ রেফ্রিজারেটরে ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা সম্ভব, সেখানে ফাইজারের টিকা মাইনাস ৯০ ডিগ্রি থেকে মাইনাস ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সংরক্ষণ করতে হবে।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ টিকা ২ ডিগ্রি থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ৫ দিন রাখা যাবে। আর রেফ্রিজারেটরের বাইরে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এ টিকা দুই ঘণ্টা ভালো থাকবে।
বাংলাদেশে এই টিকা দেওয়া হবে সরকারের করোনাভাইরাসের টিকা প্রয়োগ পরিকল্পনা অনুযায়ী। সরকারের ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট প্ল্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে এখন চল্লিশ বা কার বেশি বয়সীরা করোনাভাইরাসের টিকা পাচ্ছেন।